Saturday, November 7, 2020

হিজরাদের শিক্ষা এবং কাজের জন্য করা হল মাদ্রাসা। নাস্তিকদের কিছু ভুল ব্যাখ্যার জবাব। 

হিজরাদের শিক্ষা এবং কাজের জন্য করা হল মাদ্রাসা। নিঃসন্দেহে এটা এই বছরের সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ঘটনা। আলহামদুলিল্লাহ।


বহু বছর পরে এমন একটা খবর দেখলাম, নিঃসন্দেহে এটার চাইতে আনন্দের এবং মানবতাবাদী ঘটনা খুব কমই দেখেছি। জীবনের ঘাটে ঘাটে বঞ্চনা, অসহায়ত্ব, লাঞ্ছনা, অভাব, অবহেলা আর তিক্ততা নিয়ে বেচে থাকা এই অসহায় মানবগোষ্ঠীর জন্য সব সময় কষ্ট আর মায়া অনুভব করতাম। রাস্তায় ওদেরকে দেখলেই খারাপ লাগত যে, আহ, এই মানুষগুলোর কষ্ট বোঝার বা কমানোর মত কেউ নেই। আর এ কারনেই ওরা অনেক সময় জীবিকার তাগিয়ে রুক্ষ আর হিংস্র হয়ে যায়, মানুষের সাথে দূরব্যাবহার করে। কি করবে ? পড়ালেখার সুযোগ নেই, সামাজিক পরিচয় নেই, কিভাবে, কি খেয়ে বাচবে এই মানুষগুলো ? এজন্য বাধ্য হয়েই তারা বাচার তাগিদেই বেছে নেয় জীবনের রুক্ষ কঠিন আর হিংস্র পথ। ফলে কিছু মুসলিম দরদি এবং নিঃসন্দেহে মহান মনের মানুষের এই যে হিজরাদের জন্য ভাল কিছু করার উদ্যোগ, নিঃসন্দেহে এটা প্রশংসার দাবীদার। এর মাধ্যমে অনেকগুলো কাজ হবে। সবচাইতে বড় যে দুটো কাজ হবে, তার একটা হও, এই মানুষগুলো তোঁ আল্লহকে না চিনে সরাসরি জাহান্নামের দিকে যাচ্ছিল। আজকে তারা আল্লহু সুবহানাহুকে চিনে তার দিকে ফিরে আসার একটা পথ পেল। আর ২য় হল যে, তারা আজকে কিছু হলেও শিক্ষা পাবে, যার কারন হয়ত তারা একটু হলেও তাদের জীবিকা অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে পারবে। তাদের জীবনের কষ্টগুলো একটু হলেও কমবে।

আরেকটা জরুরী পয়েন্ট আছে। সেটা হল, আমি অনেক নাস্তিকদের সাথে আলোচনা করার সময় তারা ইসলামে হিজড়াদের পজিশন নিয়ে অনেক ফালতু কথা বলত। তারা কিছু হাদিসের অপব্যাখ্যা করে বলে যে, ইসলাম নাকি সমস্ত হিজড়াদেরকে নির্বাসনে দিতে বলে। নাউজুবিল্লাহ। তারা যে হাদিস ইউজ করে, সেখানে তারা এটাই খেয়াল করে না যে, সেখানে শুধু সেই সব হিজরাদের কথা বলা হয়েছে, যারা অশ্লীল শব্দ বা বাক্য বা আচরন করে বা নষ্টামি করে। এবং যারা নারীর শারীরিক আকৃতি পাবার পরেও পুরুষের বেশ ধারন করে আবার পুরুষের মত শারীরিক আকৃতি পাবার পরেও নারীর বেশ ধারন করে। এছাড়া সাধারন অবস্থায় কোন হিজরাদের প্রতি যে কোন প্রকার নির্বাসন দেয়া বা তাদেরকে ছোট করা বা তাদেরকে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না, সেটা এই মাদ্রাসা করার দ্বারা পরিস্কার ভাবে প্রমানিত হল। আমি সব সময় বলতাম যে, ইসলাম কখনো কোন হিজড়াকে আলাদা করে বা তাদেরকে ছোট করে বা তাদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কোন আইন করে নাই। আমরাও যা, তারাও তাই। হতে পারে তাদের শারীরিক অবস্থা আমাদের চাইতে ডিফ্রেনট, কিন্ত সেজন্য আল্লহ তায়ালা বা নবীজি তাদের সাথে কোন প্রকার খারাপ ব্যাবহার করা বা তাদেরকে ঘৃণা করা বা তাদেরকে সমাজ থেকে দূরে ঠেলে দেবার কোন প্রকার বৈধতা দেন নাই। কিন্ত এসব মূর্খ নাস্তিকরা না জেনেই আন্দাজেই বেহুদা যত ফালতু প্যাঁচাল পাড়ত। আসলে এরা এক হল পড়াশুনা যথেষ্ট করে না আর অন্যদিকে যাও বা কিছু পরে, সেগুলোকে আবার ভুল ব্যাখ্যা করে পুরাই উল্টা বোঝে। এবং তাদের সবচাইতে নিকৃষ্ট মানসিকতা হল যে, তারা জিবনে কোন ভাল কাজের প্রশংসা করার মত উদার মন মানসিকতা রাখেই না। এজন্যই আল্লহ তায়ালা এদেরকে হেদায়াত ও দেন না এদের মনের শয়তানির জন্য। আমরা যেমন ভালকে ভাল বলি, খারাপ কে খারাপ বলি। কিন্ত এরা ভালকেও ওদের মূর্খতার জন্য খারাপ বলে প্রচার করে আর যেটা সবার কাছেই ভাল, এমনকি ওরা নিজেরাও বোঝে যে, এটা ভাল, সেটাকেও ভাল বলে স্বীকার করার মত না আছে সৎসাহস আর না আছে মুক্ত উদার মন। অথচ শয়তান ওদেরকে এই বলে ধোঁকা দেয় যে, তোরাই হইলি মুক্তমনা। এজন্য তারা আবার নিজেদেরকে মুক্তমনা বলে দাবী করে। অথচ এতদিন হিজরাদের বিষয় নিয়ে তারা এত মানবতাবাদী সাজার চেষ্টা করল ইসলামের হুকুম না জেনে বুঝেই, কিন্ত আজকে যে হিজড়াদের জন্য এত সুন্দর এবং মহৎ একটা উদ্যোগ নেয়া হল, একটা সিঙ্গেল নাস্তিককে দেখলাম না সেটার প্রশংসা করে একটা সিঙ্গেল পোস্ট করতে। এই হল এদের মুক্তমনা নামের ভণ্ডামি। এভাবেই এদের মুখের চাপাবাজি ধরা খায় আর এভাবেই এরা কিয়ামতের ভয়াবহ দিনে ভয়ংকর ভাবে ধরা পড়বে আসমান জমিনের সেই অনন্ত সত্তার কাছে, যিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল জানেন। আহ, আফসোস এই সব জ্ঞানহীন মূর্খ ভাই বোনদের জন্য, যারা আজকে মুক্তমনা, মানবতা নামের মিথ্যা কথার ফুলঝুরির ধোঁকায় পরে নিজের ঈমানকে ধ্বংস করে চিরস্থায়ী জাহান্নামের দিকে চলে যাচ্ছে। আহ, এরা যদি শুধু তাদের এই ভয়ংকর মূর্খতার পরিনাম জানত বা বুঝত !!! আল্লহ তায়ালা এদেরকে সঠিক জ্ঞান এবং হেদায়াত দান করেন। আফসোস আফসোস।


কাজেই, ভাইয়া এবং আপুরা, প্লিজ, ফিরে এস সেই অনন্ত সুন্দর এবং অপরিসীম দয়ালু ও স্নেহশীল সৃষ্টিকর্তা আল্লহ তায়ালার দিকে এবং ছুটে চল সেই অন্তহীন সুখি জীবনের জন্য, যেখানে তিনি জান্নাতকে সাজিয়ে রেখেছেন তার আদরের এবং অনুগত বান্দা বান্দিদের জন্যই। প্লিজ।







Thursday, September 29, 2016

আমরা যারা ইসলামকে ভালবাসি, আল্লহ জাল্লা জালালুহুকে ভালবাসি আর ভালবাসি আমাদের নেতা, আসমান এবং জমিনের সর্দার, আখিরাতের বাদশা আমাদের প্রিয় নবিজি মুহাম্মাদ সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে , তাদের অনেক কিছু জানতে হয়। জ্ঞান অর্জন করা আমাদের জন্য ফরজ বা বাধ্যতামূলক। ফলে আমাদের সবার ভাল কিছু পড়া , জানা উচিত। কারন আল্লহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে চিনতে হলেও জ্ঞান প্রয়োজন। এই বিশাল আসমান এবং জমিনের মহাস্রস্টাকে চিনতে হলে, তার মহাজ্ঞান সম্পর্কে ধারনা পেতে হলে আগে নিজেকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য অনেক ভাল ভাল লিঙ্ক পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। সেগুলো সেভ থাকলে অনেক জরুরী সময় কাজে আসে। তাই এরকম কিছু লিঙ্ক এই ব্লগে শেয়ার করে রাখা হল। ব্লগ লিঙ্কটা সেভ রাখলেই তাতে সব খুব সহজে পাওয়া যাবে। নিজের ওয়াল এ এটা সেভ করে রাখলে আরও ভাল, সব সময় পাওয়া যাবে এবং অন্য আরও অনেকে দেখে পরবে, তাতে নিজের নেকির পাল্লা আরও ভারি হবে ইন-শা-আল্লহ। এবং আমাদের মহামহিম স্রস্টাও খুশি হবেন নিশ্চয়ই। 

 

১। মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে জরুরী লিঙ্কঃ 


http://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2016/09/30/410913


Wednesday, September 28, 2016

ঈমান জাগানিয়া কাহিনী - Imaani Story of Islam.

এক ট্যাক্সি চালকের গল্প বলা !

-------------------------

২০০৪ থেকে '০৮ সাল। অন্য কোনো কাজ না পাওয়ায় তখন ট্যাক্সি চালাতাম।

-

একদিনের ঘটনা। আলেকজান্দ্রিয়ার রাস্তায় ছুটে চলছে আমার ট্যাক্সি। বাহিরে মৃদু-মন্দ বাতাস আর ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজছে প্রিয় ক্বারী মিশরী-রাশিদ- আফাসির তিলাওয়াত। আমার অন্যতম প্রিয় সূরা। সূরা আল-হাদিদ।

রাস্তার ধারে চোখ পড়লো, ষাটোর্ধ্ব একব্যক্তি। হাত নেড়ে ইশারা করছেন ট্যাক্সি থামাতে। গন্তব্য কারমুজ। কথা না বাড়িয়ে তাকে নিয়েই আবার ছোটা শুরু করল আমার হলুদ ঘোড়াটা।

-

গাড়িতে ওঠার পর থেকেই কোনও এক অজানা কারণে লোকটি অস্থির হয়ে উঠলেন। ঘনঘন হাঁটু নাড়াচ্ছেন, তো আবার কখনও হাতে হাত ঘষছেন। কখনও মাথা চুলকাচ্ছেন তো আবার কখনো উদভ্রান্তের মতো জানালার বাইরে কিছু খুঁজে বেড়াছেন।

আবার হঠাৎ হঠাৎ ঝট করে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্যাসেট প্লেয়ারের দিকে। এমনই সময় সুললিত কন্ঠে মিশরি রাশিদ বলে উঠলেন--

''যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে এর আগে কিতাব দেওয়া হয়েছিল। তাদের উপর দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।'' [সূরা আল হাদিদ: ১৬]

-

এই আয়াতটি উচ্চারিত হবার সাথে সাথেই কান্নায় ফেটে পড়লেন লোকটি। শিশুর মতো চিৎকার করতে থাকলেন ক্রমাগত।

নিরুপায় হয়ে গাড়ি থামিয়ে ক্যাসেট প্লেয়ার বন্ধ করে দিতেই তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে অনুরোধ করলেন শেষ আয়াতটি আবার যেন বাজাই। আমি প্লেয়ার অন করে পুরো তিলাওয়াতটি শেষ হবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। আর তিনি কেঁদে যেতে লাগলেন ক্রমাগত। কান্না থামলে আমাকে শোনালেন এর পেছনের রহস্য:

-

আমার নাম মুসা'দ। হার্টের রোগী। বেশ ক বার অ্যাটাকও হয়েছে। অ্যাটাক আসলেই প্রতিবারই আমার সন্তানেরা আমার প্রতিবেশী ডাক্তারকে ডেকে আনতো। এক রাতের ঘটনা। গভীর রাতের দিকে আমার বুকে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হল। ব্যথায় অস্থির হয়ে আমি চিৎকার করতে থাকলাম।

সন্তানেরা পাগলের মতো ছুটে গেল প্রতিবেশী ডাক্তারের দরজায়। শীতের সে রাতে তিনি ঘুমের ভান করে দরজা খুললেন না। আমার সন্তানেরা আমাকে একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেল। 'সরকারী' নামটার যথার্থ মর্যাদা রাখতেই হয়তো হাসপাতালের লোকজন আমার হার্ট অ্যাটাককে খুব একটা পাত্তা দিল না। অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকলাম। ভোর হলে দেখা যাবে।

-

আমার সন্তানদের পরদিন কাজে যেতে হবে। সেসময় তাদের পক্ষে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকাটাও অসম্ভব ছিল। তাদের পাংশু মুখের দিকে তাকিয়ে আমি তাদের মিথ্যে বললাম। বললাম এখন শরীর সুস্থ লাগছে। ব্যথা নেই। আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো।

বাড়ি ফিরে আমার ব্যথাটা এতো বেড়ে গেল যে আর সইতে পারছিলাম না। এদিকে ঘরের কাউকে ব্যাপারটা বুঝতে দিতেও চাচ্ছিলাম না। ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামলাম। কোন রকমে মাহামাধ্যায়া( আলেকজান্দ্রিয়ার একটি পুরাতন লেক) এর কাছে এসে সিজদায় লুটিয়ে পড়লাম।

মনে হতে লাগলো সময়টা যেন থমকে গিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, যুগের পর যুগ যেন কেটে যাচ্ছে। আমি সিজদায় পড়ে আছি। আমার সমস্ত আবেগ আর অনুভূতির সবটুকু দিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে আল্লাহকে ডাকতে থাকলাম--

''হে আল্লাহ! তুমি হয়তো আমাকে এই শাস্তি দিচ্ছো কারণ আমি তোমার ইবাদত করি না। এবারের মতো আমায় ক্ষমা করো, আর একটিমাত্র সুযোগ আমাকে দাও; আর কক্ষনো, কোনোদিন একটি রাক'আত সালাতও আমার ছুটবে না।''

-

দুয়াতে কাজ হল না। ব্যথা আরও বেড়ে গেল। আমি হাহাকার করে উঠলাম--

থামাও হে আল্লাহ! আমার জন্য একটুও করুণা হয় না তোমার?"

কিছুক্ষণ পরই আমার ব্যথা কমে এলো। কখন যেন নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙলো ভোরের নরম আলোয়। শরীর বেশ ফুরফুরে, চাঙা। চারিদিকে গভীর শান্তি শান্তি একটা ভাব। দীর্ঘ ঝড়ের পর যেন সবকিছু শান্ত, নীরব। একটা পবিত্র স্নিগ্ধতা সর্বত্র। আহা!

-

ঘটনার পর দীর্ঘদিন কেটে গেছে। আমার বুকে ব্যথা তো দূরের কথা আর কক্ষনো হার্টের সমস্যাও আর হয়নি। কিন্তু আমি আর এক রাক’আত সালাতও আর কখনো আদায় করিনি। বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম স-অ-ব। যেন এমন কোনো কিছুই কখনো ই ঘটেনি।

আজকের এই তিলাওয়াতটি যখন শুনছিলাম, আমার মনে হচ্ছিলো স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা আমার সাথে কথা বলছেন। তাঁর ইবাদাত না করায় যেন আমাকে কড়া ভাষায় শাসন করছেন।

-

ওয়াল্লাহি! আমি এই ভয়ে কাঁদছি না যে আল্লাহ আমাকে আবারও অসুস্থ করে দিতে পারেন। আমি কাঁদছি লজ্জায়, নিজের প্রতারণার লজ্জায়। পরম করুণাময় আমার কথা রেখেছেন, আমার দুয়া শুনে আরও একটা সুযোগ দিয়েছেন, কিন্তু আমি? আমি করেছি শুধুই প্রতারণা!

...................................collected

Sunday, August 28, 2016

জান্নাতের মনোরম বাগান অথবা জাহান্নামের ভয়াবহ অন্ধকুপ


আমাদের সামনে আছে এক কঠিন ঘাটি , যেটা পার হতে হবে আল্লাহর প্রতি ইমান, ভাল কাজ দিয়ে। আর সেই ঘাটি হল জলন্ত জাহান্নাম।। নিশ্চয়ই জাহান্নামের আগুন ভয়াবহতম। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন।পৃথিবীতে আমাদের মহামহিম স্রস্টা খুব সামান্য সময়ের জন্য পাঠিয়েছেন এবং আমাদের এই পৃথিবীর সামান্য সময়ের মিশন শেষে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে সেই মহাজ্ঞানী, মহাপরাক্রমশালী আল্লহ জাল্লা শানুহুর কাছে... আর আমাদের এই পৃথিবীর কাজের বিনিময়েই সেখানে নির্ধারিত হবে আমাদের অনন্ত কালের সফলতা আর বার্থতা।  আমাদের মৃত্যুর সাথে সাথেই শুরু হওয়া যেই অনন্ত কালের যাত্রা, সেখানে পাড়ি দিতে হবে বহু বন্ধুর পথ, পেরিয়ে যেতে হবে বহু দুর্গম ঘাটি। আর সেই পথের শেষে যে মহামহিম স্রস্টা, তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন এই পৃথিবীতে ভাল কাজ করে যাবার জন্য। কারন তিনি কোন অন্যায় পছন্দ করেন না। তিনি মহাস্রস্টা, মহাজ্ঞানী। তিনি নিজের অনন্ত জ্ঞানের দারা সৃষ্টি করেছেন এই রহস্যাবৃত মহাবিশ্ব আর আমাদের মানুষদেরকে করেছেন এর আজ্ঞাবাহী। সেই মহাদয়ালু স্রস্টার আদরের কারনেই এই আসমান আমাদের মাথার উপরে ছাদের মত হয়ে আছে, পাহাড় নুয়ে থাকে বিনীত ভাবে এই মাত্র ৬ ফিট লম্বা, পিচ্চি পিচ্চি মানুষের কাছে, কোমল বাতাস ছুঁয়ে দিয়ে যায় এই আদমের বিরহী অন্তর, মেঘেরা তাদের ঝাঁপি খুলে অঝোর ধারায় নামায় শ্রাবণ ধারা ... মহাস্নেহশিল প্রভুর হুকুমে... এই আদম সন্তানের তৃষ্ণার্ত অন্তরকে কোমলতার পরশ বুলিয়ে দেবার জন্য। রক্তিম গোলাপ তার মায়াবী সৌরভ ছড়ায় এই আদমের ভালবাসার প্রয়োজনে আর রক্তাক্ত লাল সূর্য আকাশ বেয়ে গড়িয়ে চলে তাদের শীতার্ত কষ্টের রাত শেষে আশা আর নির্ভরতার প্রতিক হয়ে। বিশ্বব্যাপী এই যে মহাআয়োজনের ডালি সাজিয়ে দিয়েছেন মহাস্রস্টা তার আদরের সৃষ্টি আদমের সুখের জন্য, সেই স্নেহশীল, অভিজাত স্রস্টার সামনে তার চিররহস্যময় দরবারে যেদিন আমরা হাজির হব, সেদিন তো তিনি একমাত্র তার আদরের, সন্মানের পাত্র করবেন তাদেরকেই, যারা এই পৃথিবীতে সেই মহাস্রস্টার সৃষ্টিকুলের প্রতি ছিল ন্যায়নিষ্ঠ ও স্নেহশীল। যারা কাজ করেছে নিজের ও সমগ্র সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য। এই ক্ষুদ্র সময় শেষে তাদেরকে যে আবার ফিরে যেতে তার "অরিজিন" বা উৎস... জান্নাতে। অথচ পথে ধোঁকার ঘর এই পৃথিবীর মায়ার জালে পড়ে অহংকার, কুমতলব আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরন করে অনেকে ছিটকে পড়ে যায় অনন্তকালের সফলতার মহাপ্রশস্ত সড়ক হতে... শুধু মাত্র সামান্য কয়েকদিনের জন্য নিজের এবং নিজের আত্মার লোভকে কন্ট্রোল না করতে পারার কারন। কাজেই আমাদেরকে খুব শান্ত ভাবে, যুক্তিসহ চিন্তা করা উচিত যে, আমরা আমাদের আগামী দিনের সেই ভয়াবহ বিপদসঙ্কুল কবরের ঘড়ের এবং তার পরবর্তী সব বিস্ময়কর এবং কারো কারো জন্য অচিন্তনীয় ভয়ংকর বিপদজনক ঘাটি গুলো পার হবার জন্য কি এই পৃথিবীর খুব সামান্য সময়ের জীবনকে ভাল কাজে লাগাব নাকি বোকার মত এই অল্প সময়ের জীবনে আমাদের মহাস্রস্টাকে ভুলে, আমাদের নিজেদের মনের ইচ্ছামত জীবনকে যা খুশী তাই বেহুদা কাজে লাগিয়ে, লোভের বশবর্তী হয়ে সব অন্যায় আর পাপের কাজ করে নিজেদেরকে আগামী মৃত্যুহীন অনন্তকালের জীবনকে চূড়ান্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে অনন্ত কাল আফসোস , পরিতাপ আর ভয়াবহ সাস্তির মধ্যে কাটাব নাকি নিজে ভাল হয়ে, আশেপাশের সবাইকে ভাল করার চেষ্টা করে নিজে এবং নিজেদের প্রিয়তম সব মানুষগুলোকে নিয়ে অনন্তকালের জন্য চিরবসন্ত, চিরসবুজ, অভাবহীন এক অবিশ্বাস্য রাজকীয় জীবনের সৌভাগ্যবান মালিক হয়ে যাই আর মৃত্যুহীন, চিরযৌবনা সেই জীবনে আমাদের পাশে পাই আমাদের প্রিয় সব বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন, স্নেহের মা, শ্রদ্ধেয় বাবা, আদরের ভাই, বোন, প্রিয় ইয়ার-দোস্ত সবাইকে... অনন্ত কালের জন্য সাথি হিসেবে।

আর... সবচাইতে বড় পাওয়া, কল্পনার অতিত সেই সৌভাগ্য, সেই মহামহিম স্রস্টার সান্নিধ্য... যার শুরু হবে কিন্ত কখনও আর শেষ হবে না। কালের চাকা সেখানে গিয়ে নির্বাক বিস্ময়ে থেমে যায়, থেমে যায় সময়ের সব স্রোত... কারন তিনিই তো সময়ের মহাস্রস্টা। এবং তিনি তো কখনও কোন প্রকার অন্যায়কারীকে ভালবাসেন না। তিনি সুবহান... অর্থাৎ মহাপবিত্র... কোন অসুন্দর, পাপের জিনিষকে তো তিনি সমর্থন করতে পারেন না। এটা আমদেরকে মনে রাখা উচিত সব সময়।  কাজেই এই মুহূর্ত থেকেই আর পাপের কাজে, বাজে, ধ্বংসাত্মক, মানবতার জন্য ক্ষতিকর এমন কোন কাজে না গিয়ে বরং এখনও সময় থাকতে থাকতে ভাল কাজ করি, নিজেদের ভুল গুলোকে সংশোধন করে নেই এবং মানুষের মঙ্গলের এবং নিজের, পরিবারে, দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করে অনন্ত কালের জন্য অভাবহীন, ক্লান্তিহীন, মনোরম চিরশান্তির আলয়... "জান্নাতুল ফিরদাউসে" প্রবেশ করি আল্লহ জাল্লা জালালুহুর সন্মানিত মেহমান হিসেবে... নিজে এবং আমাদের প্রিয় মানুষগুলো সহ ...  আমাদের পরম সন্মান, শ্রদ্ধা আর ভালবাসার স্বত্বা যিনি, যিনি রাজত্ব ও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক এই সমগ্র আসমান, জমিন এবং এর ভিতরে বাইরে যা কিছু আছে... সেগুলো সব কিছুর... সেই মহামান্য স্রস্টার  রাজকীয় বন্ধুত্ব ও আপনজনের বেশে।



আল্লাহ তায়ালা বলেন, মানুষ কি এটা ভেবে রেখেছে যে তাকে আমি অনর্থক সৃষ্টি করেছি ? মানুষ কি নিজের সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে না ? সে কি নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে নাকি তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে ? তোমরা একদিন ছিলে প্রাণহীন , সেখান থেকে আমি তোমাদেরকে জীবন দান করেছি এবং আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন । 

...যে জানে আর যে জানেনা, এই দুজন কি কখনও সমান হতে পারে ???

...অন্ধ আর চক্ষুমান ... এই দুজন কি কখনও এক ?

...অথবা জীবিত আর মৃত ??...তোমরা সামান্যই অনুধাবন কর !

হে মানুষ, কোন জিনিষ তোমাকে তোমার মহান প্রভুর থেকে গাফেল করে রেখেছে ??? !!!
হে মানুষ, ভয় কর তোমাদের প্রতিপালক স্রস্টাকে, যার কাছেই তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তন।

...আর ভয় কর সেই দিনকে, যেদিন পিতা তার পুত্রের কোন কাজে আসবে না আর পুত্রও কাজে আসবে না তার পিতার। যেদিন চন্দ্রকে নির্বাপিত করে ফেলা হবে। আর আকাশকে গুটিয়ে ফেলা হবে, যেভাবে তোমরা গুটিয়ে নাও কাগজ পত্র। আর সেদিনের ভয়াবহতার কারনে স্তন্নদানকারিণী মা ভুলে যাবে তার বাচ্চাকে।

...যেদিন জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা হবে...

স্থাপন করা হবে ন্যায়বিচারের মানদণ্ড,

আর যেদিন জান্নাতকে নিকটবর্তী করা হবে...

... ... ... আপনি কি জানেন কোন সেই দিন ??? ... ... ... সেটা বিচার দিবস।

... ... "ইয়াওমাল কিয়ামা"... ...

সেদিন মানুষ জানবে যে, সে এই দিনের জন্য পৃথিবীতে থাকাকালীন সময়ে কি পাঠিয়েছিল নিজের জন্য :( :( :(